৩৪তম বিসিএসে চুড়ান্তভাবে উর্ত্তীণ সেই ৫৭ জন নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থী অদ্যাবধি চাকরিতে যোগদান করতে না পেরে বৃদ্ধ পিতা-মাতা ও পরিবার পরিজনদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেেছন। বিসিএস এর মত এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রিলিমিনারী , লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়ে আশায় বুক বেধেছিলেন দেশসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে। প্রত্যাশিত চাকরিতে যোদানের মাধ্যমে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন পিতা-মাতা তথা পরিবারের সদস্যদের মুখে। কিন্তু সে আশায় তাদের পরেছে বালি।
দীর্ঘ ৮-৯ বছরকেটে গেলেও তাদেও ভাগ্যে আজও মিলেনি চাকরি । বাক-রুদ্ধ হয়ে পড়েছে তাদের পরিবারের বৃদ্ধ বাবা-মাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) এর স্বৈরাচারি মনোভাব ও ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য ৬৭২টি পদ সংরক্ষিত রাখার কারণে পর্যাপ্ত পদ ফাকা থাকা সত্ত্বে ও চুড়ান্তভাবে উর্ত্তীণ ৩৪তম বিসিএস এর ৫৭ প্রাথী হয়েছেন বৈষম্যের শিকার।
জানা যায় ২০১৩ সালে ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষার সার্কুলার হয়েছিল । প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে প্রিলিমিনারী , লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে ২০১৫ সালের ২৯ আগষ্ট প্রকাশিত হয়েছিল ৩৪তম বিসিএস’র চড়ান্ত ফলাফল। ৬৭২টি পদ সংরক্ষিত রেখে ক্যাডার সার্ভিসে পদ স্বল্পতা দেখিয়ে এসব প্রার্থীদের রাখা হয়েছিল নন-ক্যাডার পদে। ৩৪তম বিসিএস এর নন-ক্যাডার প্রার্থীদের নাম উল্লেখ করে বিভিন্ন মন্ত্রনালয় ও অধিদপ্তর থেকে রিকুজিশনও আসলেও নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহন করেনি পিএসসি । বরং পিএসসি এসব যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ সম্পূর্ণ না করে বন্ধ করে ৩৪তম বিসিএস এর সকল নিয়োগ কার্যক্রম।
ফলে ঘোর অমানিশা নেমে এসেছিল এসব নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থীদের জীবনে। পরে উপায়ান্ত না দেখে অর্থ-মন্ত্রনালয় সহ বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের চাহিত কিছু পদের রিকুজিশন সংগ্রহ করে ২০১৫ সালে ন্যায় বিচারের আশায় হাইকোর্ট বেঞ্চে একটি রিট পিটিশন করা হয়েছিল।
দীর্ঘ শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চের বিজ্ঞ বিচারক নিয়োগ বঞ্চিত এসব প্রার্থীদের দ্রুত নিয়োগ প্রদান করতে আদেশ দেন। পিএসসি এসব প্রার্থীর নিয়োগ বন্ধে মরিয়া হয়ে ওঠে । তারা আবার এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। বর্তমানে আপিল ডিভিশনে আটকে আছে এসব প্রার্থীর ভাগ্য তথা জীবন ও জীবিকা । তারা আদৌ জানে না কবে তাদের ভাগ্যের চাকা সচল হবে। নাকি নিভে যাবে আশার প্রদীপ।
এদিকে পরিবারের বৃদ্ধ মা-বাবা আশায় বুক বেধেছিল তাদের সন্তানরা চাকরী পেয়ে তাদের মুখে দুবেলা দুমুঠো খাবার তুলে দিবে। কিন্তু সরকার ও পিএসসি’র বৈরী আচরণে তাদের আশার প্রদীপ নিভতে শুরু করলেও তারা আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে দেশে স্বৈরাচারি সরকারের পতনের পর অর্ন্তবর্তী সরকারের আগমনে।
মন্ত্রনালয়ের এক সূত্র হতে জানা যায় সরকারি চাকরিতে বর্তমানে পাঁচ লাখ এর অধিক পদ খালি রয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য বলছে সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত পদের প্রায় ২৬ শতাংশই খালি যা সংখ্যায় পাঁচ লাখের বেশি।
৩৪তম বিসিএস উর্ত্তীণ একাধিক প্রার্থী বলেছেন অর্ন্তবর্তীকালিন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা সহ অন্যান্য উপদেষ্টাগন বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। মাননীয় উপদেষ্টাগনের সদয় সহানুভূতি ও আশুহস্তক্ষেপ কেবলমাত্র হাসি ফুটাতে পারে এসব চাকরি বঞ্চিত পরিবারের বৃদ্ধ বাবা-মা ও সদস্যদের মুখে।