ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অন্তর্বরর্তী সরকারকে কোন অবস্থাতেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবেনা। সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনো ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মা বসে আছে।
তারাই নানাভাবে সরকারকে ব্যর্থ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু জনগণ এই সরকারকে ব্যর্থ হতে দিবেনা। দেশবাসী শেখ হাসিনাকে যেভাবে বিদায় করেছে, ঠিক একইভাবে ষড়যন্ত্রকারীদেরও রুখে দিবে। সরকারের কোন উপদেষ্টা ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়নের অপচেষ্টা করলে তাকেও বিদায় নিতে হবে।
মঙ্গলবার বগুড়ায় জামায়াতের রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শহরের কলোনীস্থ শাহওয়ালী উল্লাহ মিলনায়তনে আয়োজিত সম্মেলনে দুই পর্বে সভাপতিত্বে করেন বগুড়া শহর আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আবিদুর রহমান সোহেল ও জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকার। শহর সেক্রেটারী অধ্যাপক আ,স,ম আব্দুল মালেকের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামী বগুড়া অঞ্চলের টীম সদস্য মাওলানা আব্দুর রহিম ও নজরুল ইসলাম।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, শেখ হাসিনার দীর্ঘ দু:শাসনে গোটা দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে অর্থনীতি দেওলিয়া করেছে তারা । একদিকে জামায়াতে ইসলামীর প্রথম সারির নেতাদের মিথ্যা, সাজানো মামলায় হত্যা করেছে। হাজার হাজার নেতাকর্মিকে মিথ্যা, কাল্পনিক মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করে জামায়াতে ইসলামীর অগ্রযাত্রা থামানোর চেষ্টা করেছে।
কিন্তু আল্লাহর পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন। তিনি ছাত্র-জনতার অভ‚তপূর্ব অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জালিম সরকারের পতন ঘটিয়েছেন। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন হলেও এখনো তাদের প্রেতাত্মা রয়ে গেছে। এরাই নানা পরিচয়ে দেশে বিশৃংখলা সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত। এমনকি সরকারের অনেক উপদেষ্টাও সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন না। ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অন্তর্বর্তী সরকারকে কোন অবস্থাতেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবেনা।
দেশবাসী শেখ হাসিনাকে যেভাবে বিদায় করেছে, ঠিক একইভাবে ষড়যন্ত্রকারীদেরও রুখে দিবে। সরকারের কোন উপদেষ্টা ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়নের অপচেষ্টা করলে তাকেও বিদায় নিতে হবে বলে তিনি হুশিয়ারি উচ্চারন করেন। তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িতদের বিচার অবশ্যই করতে হবে। যারা সরাসরি গণহত্যার সাথে জড়িত এবং যারা ফ্যাসিবাদের দোসর তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রশাসনে যেসব দক্ষ, যোগ্য কর্মকর্তা ফ্যাসিবাদের শাসনামলে বঞ্চিত হয়েছেন তাদেরকে যথাযথ জায়গায় বসাতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের কোনভাবেই পূনর্বাসনের সুযোগ দেওয়া হবেনা।
জামায়াতের রুকনদের উদ্দেশ্যে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ইসলামের সুমহান দাওয়াত পৌঁছানোর মাধ্যমে সংগঠনকে মজবুত করতে হবে। জামায়াতের প্রতিটি রুকনকে ইসলামী জ্ঞানের জগতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে হবে। চারিত্রিক মাধুর্য দিয়ে মানুষকে ইসলামের পথে আকৃষ্ট করতে হবে। পরে বগুড়া শহর ও জেলা শাখার মহিলা রুকনদের পৃথক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে নতুন সেশনের জন্য শহর ও জেলা আমির নির্বাচনে রুকনদের সরাসরি ভোটগ্রহন করা হয়। উল্লেখ্য, বগুড়ায় জামায়াতের বর্তমান রুকন সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার।