নগরীতে শাক বিক্রি করে স্ববলম্বী হচ্ছে নারীরা

আবু হেনা মোস্তফা জামান, রাজশাহী: / ২৭ বার ::
আপডেট সময় :: সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

নগর জীবনে ব্যস্ততার ফাঁকে শাক কিনে কেটে-বেঁছে খাওয়ার আলস্য অধিকাংশ মানুষের। অনেকে শাক কাঁটা-বাছাকে আপদই মনে করেন। আর একারণেই অনেকে খেসারি, বথিয়া ও কাঁটাখোঁড়া শাক বাসায় তোলেন না। তবে এবার নগরীর বেশকিছু মোড়ে পছন্দের শাক কেটে বিক্রি করছেন নারীরা। যে শাকের ব্যাপক চাহিদার কথা জানাচ্ছেন বিক্রিতারা। এছাড়া শাক বিক্রি করে এসব নারীদের স্বচ্ছলতাও ফিরেছে।

নগরীর সিএনবির মোড়, পদ্মা পাড়, পদ্মা গার্ডেন, বাইপাস মোড়ে প্রায়শই বেশকিছু নারীদের সারিবদ্ধ হয়ে শাক কেটে বিক্রি করতে দেখা যায়। যারা পদ্মার জেগে ওঠা চরসহ গ্রাম থেকে শাক সংগ্রহ করে শহরে এনে বিক্রি করেন।

এমননিই একজন চম্বা বেগম। তিনি জানান, খেসারি, বুট, কাঁটাখোড়া ও বথুয়ার শাকের চাহিদা অনেক। কিন্তু কাটা-বাছার কারণে অনেকে কিনতে চান না। প্রথমে তিনি শাক তুলে এনেই বিক্রি করছিলেন। কিন্তু ক্রেতারা আসে দেখে আবার চলে যায়। এরপর কয়েকজন শাক কেটে বিক্রির পরামর্শ দেন। এরপর থেকে তিনি কেটেও বিক্রি করেন। এখন ভালো বেচাবিক্রি হচ্ছে।

বিক্রিতারা জানান, তাদের কেউ শাক চর থেকে তুলে আনেন। আবার কেউ জমির মালিকের থেকে কিনে এনে বিক্রি করেন। বুট ও খেসাড়ির শাক কেটে-ধুয়ে ৮০-১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেন। আর বথিয়ার দাম কম। ধুয়ে-কেটে ৫০-৬০ টাকায় বথিয়া বিক্রি করেন। সেখান থেকে গড়ে প্রতিদিন গড়ে ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা লাভ হয় তাদের।
শাক কিনতে আসা রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন জানান, শাক রান্নার চেয়ে কাটাকুটি করা বেশি কষ্টের।

আর মেসে খালাও শাক কেটে রান্না করতে চান না। একারণে শাক আর পাতে ওঠে না। পছন্দের শাক বাজারে গিয়ে দেখতেই হয়, কেনা হয়ে ওঠে না। তবে এখানে টাটকা শাক। অত্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। তাই খেসারি ও বুটের শাক পৃথকভাবে দুই কেজি কিনলেন। এগুলো এখন শুধু মসলা দিয়ে রান্না করলেই হয়ে যাবে।

রাজশাহীর একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক তিতুমীর হোসেন বলেন, এসব শাক পরিবারের সবার পছন্দের। কিন্তু না কেটে এই শাক বাসায় নিয়ে গেলে পঁচে নষ্ট হবে। খাওয়া হবে না। তাই এখান থেকে কেটে শাক নিয়ে যান প্রায়ই।

তিনি আরও বলেন, এই শাকগুলো তার অত্যন্ত পছন্দের। কিন্তু সব জায়গায় পাওয়া যায় না। সব সময়েও পাওয়া যায় না। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে চরসহ গ্রাম থেকে তাজা শাক কিনে এনে এই নারীরা বিক্রি করেন। আর এই শাকের স্বাদের কোন তুলনা হয় না।

Print Friendly, PDF & Email


এ জাতীয় আরো খবর