• November 21, 2024, 3:34 pm

বগুড়ায় আদা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে

বিশেষ প্রতিনিধিঃ 59 Time View :
Update : Friday, September 27, 2024

মশলার গ্রাম বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় এখন ঘরে ঘরে চলছে বস্তায় আদা চাষ। শুধু আদাই নয়। বস্তায় আদা চাষের পাশাপাশি বাড়ির আনাচে কানাচে রোপন করা হচ্ছে তেজপাতা, লবঙ্গ, গোল মরিচ, আলু বখারা, কাবাবচিনি, এলাচ। বস্তায় আদা চাষ এখন শুধু শিবগঞ্জ উপজেলা ছাড়া জেলার ১২ টি উপজেলায় ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে এমনটি জানালেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচলক মতলুবর রহমান।

স্বল্প খরচে বেশি লাভজনক হওয়ায় এই উপজেলা মানুষ উদ্বুদ্ধ হয়ে বস্তায় আদা নামের এই মশলা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বস্তায় আদা চাষ করে বাাপক সাড়া ফেলেছে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার চাষিদের মধ্যে ।উপজেলার এমন কোন ইউনিয়ন নেই যেখানে বস্তায় আদাসহ অন্যান্য মসলা চাষ হচ্ছে না। শিবগঞ্জ উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলায় মসলা চাষে অভাবনীয় সাফল্য মিলছে।

উপজেলা সহকারি কৃষি অফিসার রাশেদুল ইসলাম জানান, তারা বস্তায় আদা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা ফলে এই মশলা চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের মানুষের অব্যবহৃত জায়গায় আদা চাষের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

ইতিমধ্যে অনেক উপজেলায় বস্তায় আদা চাষ শুরু হয়েছে। তিনি জানান, আদার পাশা পাশি কৃষকরা বগুড়া মশলা গবেষনা কেন্দ্র থেকে তেজপাতা, লবঙ্গ, গেল মরিচ, আলু বখারা, কাবাবচিনি, গোল মরিচ, এলাচর সহ নানা জাতের চারা এনে বসতবাড়ির অব্যবহৃত স্থানে রোপন করেছে। তা থেকে কঙ্খিত ফলও মিলছে।

শিবগঞ্জ উপজেলার মাঝপাড়া গ্রামে বস্তায় আদা চাষ শুরু হয় গত বছর থেকে। গত বছর স্বল্প পরিসরে আদা চাষ হয়েছে উপজেলার মাঝগ্রামে। মোকামতলা ইউনিয়নের মাঝগ্রামের দেখা দেখি এই বছর বস্তায় আদা চাষ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই গ্রামের বস্তায় আদা চাষী মাহদুদুল আলম জানান, ক্ষেতে আদা চাষ করলে অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় ক্ষেতের রোপিত আদা পচে যেত । আর তা ছাড়া ক্ষেত অনেক সময় পাহারা দেয়া যেত না ।এখন বাড়ির আশে পাশে ,ছাদে ঘরের কোনায় ও অব্যবহৃত আদা চাষ করা সহজ হয়েছে। তা ছাড়া বস্তায় আদা চাষে বৃষ্টির পানি বস্তায় দিয়ে চুইয়ে সাতে সাথে নেমে মাটিতে যায়।

ফলে আদা পচে যাবার কোন সম্ভাবনা থাকে না। বাজারে আদার অনেক দাম।তারা এই পদ্ধতিতে আদা চাষ করে ভালো মানের আদা পাচ্ছেন। এই পদ্ধতিতে আদা চাষ করলে ক্ষেতের জমি নষ্ট হয় না। তিনি মনে করে দেশের প্রতিটি জেলার গ্রামে গ্রাাম আদা চাষ করলে বিদেশ থেকে আদা চাষ আমদানি করতে হবে না ।দেশে বৈদেশিক মূল্যের অপচয় হবে রোধ হবো।

এই গ্রামের দেখি উপজেলায় বস্তায় আদা চাষ লাভ জনক হওয়ায় মানুষ তাদের অব্যবহৃত জমি অর্থাৎ বসতবাড়ির আসে পাশে , উঠানে , বাড়ির ছাদে বস্তায় আদা চাষ করছেন। শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নে বাড়ির আশে পাশে ছায়াযুক্ত ঝোপঝাড় ,বাড়ির ছাদে এখন শুধু আদা আর আদার চাষ।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৩০ হাজার বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অদিপ্তরের এই বছর প্রতিটি ইউনিয়নে ১ হাজার বস্তা আদা চাষেল লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করে দিয়েছে। উপ-সহকারি কৃষি অফিসার রাশদুল ইসলাম জানান, প্রতিটি বস্তায় আদা চাষে খরচ হয় (বস্তা, জৈবসার, পটাশ,কিটনাশক) ৩৫ থেবে ৪০ টাকা। এক বস্তায় আদা চাষ করে পাওয়া যাচ্ছে এক থেকে দেড় কেজি আদা ।

এবছর ৩০ হাজার বস্তায় ৩০ টনের বেশি আদা পাওয়ার আশা করছেন এই কৃষি কর্মকর্তা। তিনি মনে করেন দেশের বিভিন্ন গ্রামের বিদ্যালয় অব্যবহৃত জায়াগায় বস্তায় আদা চাষ করলে করলে দেশে আদার সংকট হবে না। বস্তায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইন্সটিটিউটের উদ্ভাবিত আদা বারি -২ চাষ হচ্ছে। মান সম্মত আদাও পাওয়া যাচ্ছে।

মোকামতলা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের আদাচাষি আজিজুল জানান, তিনি আগে খোলা জামিতে আদা চাষ করতেন। বৃষ্টিতে আদার জমিতে পানি জমে আদা পচে যেত। এখন বস্তায় আদা চাষ করে আদা পচে না বৃষ্টি হলেও সেই পানি বস্তা দিয়ে দ্রæত চুইয়ে মাটিতে চলে যায়। বস্তার আদা স্বচ্ছ। আদা বিক্রি জন্য একটা পৃথক হাট বা বাজার হওয়া প্রয়োজন।

মতলুবর রহমান, উপ-পরিচালক, জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের জানান, বস্তায় আদা লাভ জনক এই বিষয়টি কৃষকেদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা।

 


More News of this category