হজরত আলী শান্তশিষ্ট ভদ্র প্রকৃতির। অফিসে সবাই তাকে ‘হজরত’ বলে ডাকে। তবে তিনি সবাইকে ‘আলী’ নামে ডাকতে বলেছেন। অ্যাকাউন্সের আতিক সাহেব তাকে ‘হজরত’ নামে এই অফিসে চাকরির শুরু থেকে ডাকছেন বলে সবাই তাকে এ নামেই এখন ডাকে।
হজরত একজন ভীষণ স্বপ্নবাজ যুবক। জীবনে তাকে বড় একটা কিছু করতেই হবে—এমন চিন্তায় সব সময় নিমগ্ন থাকেন তিনি। হয়তো অর্থ বিত্ত বৈভবে অনেক বড়; নয়তো এমন কোনো কাজ করতে হবে যাতে দেশের মানুষ তাকে একনামে চিনতে পারে। কিন্তু কীভাবে হবে তার এ স্বপ্ন পূরণ, তার কোনো পথ এখন আর খুঁজে পাচ্ছেন না হযরত আলী।
ভালো চাকরি করে জীবন বদলাতে চেয়েছিলেন হজরত আলী। অনেক চেষ্টা করেছেন সরকারি-বেসরকারি ভালো চাকরির জন্য। তবে বড় কোনো চাকরি জোটাতে পারেননি। চাকরির পরীক্ষা দিতে দিতে হজরত আলী বুঝেছেন—বড় চাকরি আসলেই সোনার হরিণ, তা সহজে ধরা দেয় না।
অবশেষে অনেক চেষ্টা তদবীর করে একটি বেসরকারি চাকরি জুটিয়েছেন হজরত আলী।
যে চাকরি করে জীবন বদলাতে চেয়েছিলেন, এখন সেই চাকরিই যেন তার সব সম্ভাবনার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। হজরত আলীর ভাষায়, তিনি এখন জীবনের মাইনকা চিপায় আটকে পড়েছেন। এই চাকরিতে তিনি মোটেই সন্তুষ্ট নন।
হজরত আলীর স্বপ্ন ছিলো—তিনি অনেক বড় চাকরি করে গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য একটি হাসপাতাল নির্মাণ করবেন। নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের জন্য একটি উন্নত পাঠাগার গড়ে তুলবেন, গ্রামে যাতে আলোকিত মানুষ তৈরি হয়—এরকম আরও কত কত স্বপ্ন হজরত আলীর দুচোখজুড়ে। কিন্তু যে বেতনে হযরত আলী চাকরি করছেন, তাতে তার ঢাকার শহরে নিজের খাই-খরচেই চলে যায়। ফলে দিন দিন তার দুচোখের স্বপ্ন ম্লান হতে থাকে। তবুও হজরত আলী স্বপ্ন দেখতে চান।