রাজশাহী মহানগরীতে শিশু গৃহকর্মী আলিদার (৯) চোখে-মুখে ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে নির্মম নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ন। তার বাবা-মা থাকেন সৈয়দপুর নীলফামারীতে। বছর দুই-এক আগে সে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানাধীন খুলিপাড়া বৌবাজার এলাকার ড. শামীম ও তার স্ত্রী সেতু (৩৫) দম্পতির বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে আসছে। প্রায়ই তার উপর চালানো হতো নির্যাতন। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর ) রাতে নির্যাতনের পর তাকে বৃষ্টির মধ্যে বাইরে বের করে দেওয়া হয়।
এসময় স্থানীয়রা ঐ বাড়ীটি ঘিরে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ওয়ান-ষ্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে(ওসিসি) ভর্তি করে। এ ঘটনায় গৃহকত্রী সেতু বেগমকে (৩৫) পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান, বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মেহেদী হাসান। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে শিশু নির্যাতনের অভিযোগে খুলিপাড়া এলাকা থেকে সেতু নামের এক গৃহকত্রীকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। শিশু আলিদার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপরাধ।
সৈয়দপুর নিলফামারী থেকে শিশুটির মা-বাবা রওনা দিয়েছেন তারা আসলে গৃহকত্রী সেতু বেগমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গৃহকত্রী সেতু বেগমের এক আত্মীয় জানান, তিনি একজন মানুষিক রোগী। এর আগেও একই কায়দায় শিশুটিকে নির্যাতন চালিয়েছেন তিনি। সেসময় জানাজানি না হওয়ায় বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। সেতু বেগমের স্বামী ড. শামীম হোসেন তিনি একজন কৃষি বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহে কর্মরত আছেন।
স্থানীয় সুইট নামের এক যুবক জানান, গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। এসময় এলাকার একটি জঙ্গলের পাশে অন্ধকার গলিতে শিশু কান্নার আওয়াজ পায়। সামনের দিকে এগিয়ে দেখি ভেজা শরীরে শিশুটি থরথর করে কাঁপছে এবং প্রচন্ড ভয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে।
পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশে ফোন দেয়। পুলিশ আসা মাত্রই স্থানীয়দের সঙ্গে গৃহকত্রী সেতু বেগমের ফ্ল্যাট বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সে সকলের সাথে খারাপ আচারণ করে।
সুইট আরও জানান, বছর দুই-এক আগে শিশুটির চাচা কাজের জন্য সেতু বেগমের বাসায় রেখে য়ায়। তার বাবা-মা খুবি গরিব। তারাও পরের বাসায় কাজ করে খান। রাজশাহীতে তার আত্মীয়-স্বজন বলতে কেও নেই।