মানিকগঞ্জের নারী-শিশু আদালত বর্জন করা হয়েছে। গত রবিবার দুপুরে আইনজীবীদের সাথে বিচারকের অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনে আদালত বর্জন অব্যাহত রেখেছেন আইনজীবীরা। তারা সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক তানিয়া কামালের অপসারণ দাবি করেছেন।
আইনজীবীগণ অভিযোগ করেন, গত রবিবার একটি মামলার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল এর বিচারক তানিয়া কামাল আইনজীবীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করেন। একপর্যায়ে তিনি আইনজীবীদের দিকে নথি ছুড়ে মারেন মর্মে অভিযোগ করেছেন উপস্থিত আইনজীবীগণ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট বিচারকের আদালত বর্জন করেন উপস্থিত আইনজীবীগণ। ঘটনার পর বিচারক এজলাস থেকে নেমে যান। এরপর থেকে উক্ত বিচারক ছুটিতে আছেন বলে জানা গেছে। কিছু আইনজীবী আদালত বর্জন করলেও আদালত বর্জনের মত কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার একটি নারী-শিশু মামলায় আসামির জামিন শুনানির জন্য ডাকা হলে নিয়োজিত কৌসুলী সিনিয়রদের সাথে নিয়ে পরে শুনানি করবেন বলে মৌখিকভাবে আদালতকে জানান।
আদালত তাদের মৌখিক আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটি পরবর্তীতে শুনানির জন্য রাখেন। বেলা অনুমান ১২:৩০ ঘটিকার দিকে আসামিপক্ষে ২০/২৫ জন কৌসূলি আদালতে বিদ্রোহী গান কবিতা দিয়ে শুনানী শুরু করেন।
আদালত তাদেরকে আইনমাফিক মামলার শুনানি করতে বললে আইনজীবীগণ বলেন, তাদের অনেক কথা আছে সব শুনতে হবে। আদালতের তাদেরকে বক্তব্য রাখতে বলেন এবং অন্যান্য আইনজীবীদের বসার জন্য অনুরোধ করা হয়। এ সময় কোন কারণ ব্যতীত হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে আইনজীবী মহিউদ্দিন স্বপন এবং বজলুর রহমান উচ্চস্বরে বিচারকের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। এ সময় অন্যান্য আইনজীবী বিচারকের চরিত্র এবং মামলার নথি জামিনযোগ্য ধারা বলে বারবার প্রশ্ন উত্থাপিত হলে বিচারক তার সামনে থাকা টেবিলে আইনজীবীদের দেখার উদ্দেশ্যে নথি ছুড়ে দেন।
এসময় অন্যান্য অনেক আইনজীবী উচ্চস্বরে হট্টগোল করেন এবং আদালতকে হুমকি প্রদান করেন। এমনকি, তারা বিচারকের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। আদালত তাদেরকে শান্ত হওয়ার অনুরোধ করলেও তারা দুর্ব্যবহার ও বিশৃংখলা অব্যহত রাখেন। পরে আদালত আ্মইনজীবীদের এমন কান্ডে মর্মাহত হয়ে চলমান আদালতে আল্লাহর কাছে বিচার চেয়ে বিচারিক কাজ শেষে এজলাস ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল এর স্টাফরা জানান,‘আইনজীবীরা আদালতের বিশৃংখলা সৃষ্টি করেছেন। আদালত বার বার অনুরোধ স্বত্বেও তারা তাতে কোন ধরণের ভ্রুক্ষেপ না করে বিচারক এবং বিচার বিভাগকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। এমনকি তারা, বিচারকের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েও আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন যা কোনভাবেই প্রত্যাশিত নয়।
আদালত বর্জনের বিষয়ে তিনি বলেন, আদালত বর্জন হয়নি। শুধু ওই মামলার আইনজীবীরা হট্টগোল করলে বিচারক নিজেই এজলাস থেকে নেমে যান। এই ঘটনায় আমরা খুবই মর্মাহত। বিচারক ৪ দিনের ছুটিতে আছেন। আইনজীবীদের এমন আচরনে বিচারক খুবই মর্মাহত হযেছেন।